বিড়ালদের অন্য প্রাণীদের থেকে ঘুমানোর রুটিন কিছুটা ব্যতিক্রম থাকে এবং প্রায়ই রাতে তাদের ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। এর কারন হলো এরা ক্রিপাস্কুলার প্রাণী, অর্থাৎ এরা রাতে শিকার করে এবং সন্ধ্যায় ও খুব ভোরে অনেক বেশি কর্মক্ষম থাকে। how to get a cat to sleep at night
বিড়ালদের এধরণের আচরণের জন্য তাদের মাঝেমধ্যে রাতের পাগল ও বলা হয়ে থাকে। এটি বিড়ালের মালিকের জন্যও হয়ে থাকে। এছাড়াও আপনার বিড়াল রাতে না ঘুমায় তবে আপনি তার জন্য কিছু কাজ করতে পারেন যা তার অভ্যাস পরিবর্তনে সাহায্য করবে।
সদ্য জন্ম নেয়া বিড়ালছানার সঠিক যত্ন কিভাবে নিবেন? জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন

রাত্রিকালীন কর্মচঞ্চলতার কিছু লক্ষণঃ
আপনার বিড়ালের এমন কিছু আচরণ করতে পারে যার জন্য আপনি ঘুমাতে পারবেন না। এমন আচরণ হয়তো সন্ধ্যায় শুরু হবে অথবা মধ্যরাতে আপনার ঘুম ভাংগার কারন হবে। বিড়ালের যেসব আচরণ দেখা যেতে পারে:
- বন্য আচরণ, আপনার ফার্নিচার এর উপর লাফি সিয়ে পার হতে চাইবে।
- আপনি ঘুমানোর সময় আপনার পায়ে খামচি দিতে চাইতে পারে।
- আপনার ঘুমের মধ্যে কানের মধ্যে শব্দ করার চেষ্টা করতে পারে।
- আপনার ঘুমের মাঝখানে আপনার উপর দিয়ে হাটাহাটি করতে পারে।
- কান্নাকাটি বা মিউমিউ করে শব্দ করতে পারে।
নতুন বিড়ালকে কিভাবে পুরাতন বিড়ালের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবেন? জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন
আপনার পোষা বিড়ালের এধরণের কর্মকান্ডের কারন কি?
বিড়ালরা সবচেয়ে বেশি কর্মক্ষম থাকে রাতে অথবা খুব ভোরে। এর বেশ কিছু কারন থাকতে পারে। যেমন-
- বিড়ালরা ক্রিপাস্কুলার প্রাণী। অর্থাৎ এরা সবচেয়ে বেশি কর্মক্ষম থাকে ভোর এবং সন্ধ্যায়। তবে, কিছু পোষা বিড়াল বাইরে অনেক বেশি সময় কাটায়, এভাবেও তারা এমন কিছু অভ্যাস তৈরী করতে পারে যাতে তাদের রাতে বেশি কর্মচঞ্চলতা দেখা দেয় যেহেতু রাতে তাদের শিকার করার প্রবণতা থাকে।
- কম বয়সী বিড়ালদের অনেক বেশি কর্মশক্তি থাকায় এবং এক্সাইটেড থাকায় দিনের যেকোনো সময়ে তাদের কর্মচঞ্চলতা দেখা যায়।
- ভয়ের কারনেও কিছু বিড়াল দিনের সময় লুকিয়ে থাকতে পারে। যখন অন্যান্য প্রাণীরা দিনের বেলা চলাচল করে তখন তারা বাইরে বের হতে ভয় পায়। রাতে যখন অন্যান্য প্রাণীদের চলাচল কমে যায় তখন বিড়ালরা বের হতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।
- বিড়ালরা তাদের মালিকের সময়ের সাথে নিজের সময় মিলাতে চেষ্টা করে। অনেক বিড়ালের মালিকই বিকালবেলা অবসর সময় পান এবং সে সময়ে তারা তাদের বিড়ালের সাথে নানা ধরনের খেলাধূলা করে থাকেন। মালিকের এধরণের সময়ের সাথে তাল মিলাতেই তাদের রুটিন বদলে যায়।
- বাসার একা থাকাঃ আপনি যদি আপনার বিড়ালকে বাসায় একা রেখে যান অর্থাৎ আপনি অফিস,বা স্কুলে যান তবে সারাদিন সে রিল্যাক্স করার জন্য অনেক সময় পায় যা সে ঘুমিয়ে কাটায়। এতে তার ঘুমানোর সময় বদলে যায়।
- একঘেয়েমিঃ যদি আপনার বিড়াল দিনের বেশিরভাগ সময় একা থাকে তবে তার মধ্যে একঘেয়েমি চলে আসে। এই একঘেয়েমি কাটাতে সে আরও বেশি মানুষের মনোযোগ পেতে চায়। তাই রাত্রিকালীন সময়ে তার কর্মকান্ড বেড়ে যায়।
- ক্ষুধাঃ বিড়াল বেশিরভাগ সময় রাতে খাবার খেতে ঘুম থেকে উঠে। যা তার স্বাভাবিক শিকার করার প্রবণতা প্রকাশ করে।
- বয়স্ক হওয়ার প্রভাবঃ ঘুমের সময়ের পরিবর্তন বিড়ালের বয়স হওয়ার একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। আপনার বিড়ালের হয়তো বয়স হওয়ার কারনে ঘুমের সময় বদলে যাচ্ছে যা স্বাভাবিক এজিং প্রসেস এর অংশ।
কিভাবে বিড়ালকে potty train করবেন অথবা litter box ব্যবহার করা শেখাবেন? জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন
কিভাবে আপনার বিড়ালকে রাতে সময় মত ঘুম পাড়াবেন?
আপনি আপনার বিড়ালকে ট্রেইন করতে পারেন বা দিনের বেলা কিছু এডজাস্টমেন্টের মাধ্যমে আপনার বিড়ালকে রাতে ঘুমানোর জন্য অনুপ্রাণিত করতে পারেন। how to get a cat to sleep at night সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রাতের কর্মচঞ্চলতাকে প্রশ্রয় না দেয়া এবং দিনের খেলাধূলা এবং খাবার গ্রহনের অভ্যাস গড়ে তোলা। আরো কিছু ব্যাপার যা মেনে চলতে পারেনঃ
১. পশুচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যানঃ
যদি এটি নতুন কোনো অভ্যাস হয়ে থাকে তবে তাকে পশুচিকিৎসক বা ভেটের কাছে নিয়ে যান। বেশি লক্ষণীয় কোনো পরিবর্তন দেখতে পান তবে তা মেডিকেল ইস্যুতে পরিণত হতে পারে।
২. তাদের খেলার সময় বাড়িয়ে দিনঃ
আপনার বিড়ালের ঘুমানোর সময় হওয়ার আগে তার সাথে খেলাধুলা করার চেষ্টা করুন। সন্ধ্যায় যেন না ঘুমাতে পারে তা লক্ষ্য রাখুন এবং নিম্নোক্ত উপায়ে খেলতে দিনঃ
- লেজার লাইট দিয়ে খেলা।
- বিড়ালকে টিজ করে খেলা করা।
- খেলনা ছুড়ে দিয়ে কুড়িয়ে আনতে বলা।
৩. জেগে থাকার পরিবেশ তৈরি করুনঃ
বিড়ালরা দিনের বেলায় অনেক ঘুমায় কারন দিনের বেলা তাদের জেগে থাকার জন্য আগ্রহী করে না। নিম্নোক্ত আইডিয়াগুলো আপনার বিড়ালের জন্য জেগে থাকার পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করবে:
- এমন কিছু ব্যাটারিচালিত খেলনা দিন যেন তা তাকে ব্যস্ত রাখতে সাহায্য করে। যেমন: ব্যাটারি চালিত গাড়ি, রোবট ইত্যাদি।
- এমন একটি উইন্ডো ইন্সটল করুন যেন আপনার বিড়াল প্রজাতি দেখতে পারে অথবা অন্য এমন কিছু পশুপাখি দেখতে পায় যার দিকে আপনার বিড়াল তাকিয়ে থাকতে পারে।
- আপনার বিড়ালকে এমন একটি পাজল ফিডার পাত্রে খাবার দিন যা তাকে ব্যস্ত থাকতে সাহায্য করবে।
৪. ট্রেনিংঃ
ক্লিকার ট্রেনিং এমন একটি পজিটিভ রিইনফোর্সমেন্ট ট্রেনিং যা শুধু আপনার বিড়ালকে মানসিক শান্তিই দিবে না তার পাশাপাশি আপনার সাথে আপনার বিড়ালের সম্পর্কও মজবুত করে তুলবে।
৫. তার কিছু আচরণ উপেক্ষা করুনঃ প্রয়োজনবোধে কানে ইয়ারফোন ব্যবহার করুন।
৬. বিড়ালকে শয়নকক্ষের বাইরে রাখুনঃ
আপনার শয়নকক্ষের দরজা লাগিয়ে ঘুমান এবং তার পাশের রুমে একটি আরামদায়ক বিছানা দিয়ে ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দিন।
৭. প্রয়োজনে একটু বিরক্তি দেখানঃ
যদি আপনার বিড়াল আপনার শয়নকক্ষের দরজার ঠিক পাশেই বসে থাকে, মিউমিউ করতে থাকে এবং দরজা খামচানোর চেষ্টা করে তবে এতে বিরক্তি দেখাতে চেষ্টা করুন।
৮. তার খাবার খাওয়ার সময়ের পরিবর্তন করুনঃ
বিড়ালরা সাধারণত খাবার খাওয়ার পর পরই ঘুমিয়ে পড়ে। তার খাবার খাওয়ার পরিমাণ এবং সময় পরিবর্তনের মাধ্যমে দিনের বেলা তাকে কর্মক্ষম করে তোলা সম্ভব। চাইলে আপনি একটি অটোমেটিক খাবার খাওয়ার মেশিন দিয়ে খাবার দিতে পারেন যা তাকে অল্প করে নির্দিষ্ট খাবার দিবে। বিড়ালের খাবারের ধরন পরিবর্তনও বেশ কাজে দিতে পারে।
৯.ঔষধ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেঃ
যদি আপনার বিড়াল উপরের কোনো কাজেই সাড়া না দেয় তবে চাইলে ভেটের পরামর্শে কিছু মেডিকেল সাহায্য নিতে পারেন। তবে, আপনার বিড়াল ঘুমের ওষুধের সাথে যদি টলারেন্স ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তবে কিছু রাত পর হয়তো এসব ওষুধ আর এতটা কাজে নাও দিতে পারে।
১০. আপনার বিড়ালকে দিনের বেলা কাজে ব্যস্ত রাখুনঃ
একটি ফিডিং টয় আপনার বিড়ালকে শারিরীক এবং মানসিক উভয়দিকেই সাহায্য করবে। নতুন খেলনা কেনা বা খেলনা বদলিয়ে খেলতে দেয়া আপনার বিড়ালকে ব্যস্ত রাখতে সাহায্য করবে।
আপনি হয়তো ভাববেন যে ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠানো এবং তাকে খাবার দেয়ার মাধ্যমে তার অভ্যাস পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু তার আচরণকে পাত্তা না দিয়ে তাকে রাত জাগায় অনুৎসাহিত করা সবচেয়ে ভালো উপায়। রাতে জেগে থাকলে যদি তাকে খাবার দেয়া হয় তবে সে রাত জাগতে উৎসাহ পায়। এধরণের দৃষ্টি আকর্ষণ করাই তার রাত জাগার অন্যতম উদ্দেশ্য।
যদিও হয়তো আপনি কিছুটা ক্লান্ত অনুভব করবেন। কিন্তু মনে রাখবেন যে রাত্রিকালীন কার্যকলাপ আপনার বিড়ালের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। যদি আপনার বিড়াল আপনাকে ঘুমাতে না দেয় তাহলে সবচেয়ে ভালো তার সাথে দিনেরবেলায় খেলার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে তাকে ব্যস্ত রাখা।
যা করবেন নাঃ
১। বিড়ালকে কোনো প্রকার পানিশমেন্ট দেয়া যাবে না। এমন কি কোনো প্রকার গালিও দেয়া যাবে না। পানিশমেন্ট একটি ভয়ার্ত বিড়ালকে আরও বেশি ভয় পাইয়ে দিতে পারে। এর ফলে বিড়ালটি আরো অনেক উগ্র ব্যবহার করতে পারে।
২. বিড়ালকে খাওয়ানোর জন্য ঘুম থেকে তুলবেন না বা তাকে রুমের বাইরে পাঠিয়ে দিবেন না। তার সাথে করা যেকোনো ব্যবহার তার উগ্র হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
৩। বিড়ালকে কোন কিছুতেই জোড় করবেন না।
বিড়ালের নখ কিভাবে কাটবেন? জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন
আমার বিড়াল শারীরিক মানসিক প্রতিবন্ধী, যার কারণে নিউটার করিয়েছি প্রায় ৩ মাস,এতো দিন ভালোই ছিল,আজ প্রায় ৭/৮ দিন সে রাতে একদম ঘুমায় না, বাইরে যাওয়ার জন্য অস্থির থাকে কাউকে ঘুমাতে দেয় না,রাতে ১১টার পর নিজেই ঘুমাতে আসে রাত ৩ টা পর্যন্ত ঘুমায়,এরপরে সম্ভব হয় না,তার ওজন কম,খাওয়া কম,গ্যাস হয় পেটে রেগুলার, ২ দিন আগে হিটেও আসছে নিউটারের পর,ওর ভেট ওকে ঘুমের মেডিসিন দিলেও কাজ করেনি,ও না ঘুমালে বমি করে পটি হয় না।কি করতে পারি?
Please go to a vet for further assistance!
আরেকটা বিষয় হলো সে বাইরে বসে থাকতে পছন্দ করে বেশি,এখন এক কথায় বাইরের নেশা এতো বেশি আমি কিছুই তে কন্ট্রল করতে পারছি না,দিনে ভালো ঘুমায়,জন্মের পর থেকেই ওর নিউরলজিক্যাল সমস্যা আছে বিছানায় pee করে।আমি এর সমাধান চাচ্ছি।
Please go to a vet.
আমার বিড়াল টা রাতে ঘুমায়না তাই টেনশনে থাকি। কি করলে ওর রাতে ঘুমাবে
এটা ছেলে বিড়াল। বয়স প্রায় ছয় থেকে সাতমাস।