বাসায় তৈরি ডগ ফুড রেসিপি Some Homemade Dog Food

অনেক আগে কুকুর এবং মানুষ উভয়ের জন্যই কমার্শিয়ালি একিই খাবার উৎপাদন করা হত। তখন কুকুর মানুষ যা খেত ঠিক সেটিই তারাও খেত। অনেক সময় দেখতে পাবেন আপনার খাবার খাওয়ার জন্য তারা খুবই উৎসাহী হয়ে আছে। এই লিখাটিতে আমরা তুলে ধরবো কুকুরে খাবার Some Homemade Dog Food, নিউট্রিশন, প্রস্তুত প্রণালী এবং গাইডলাইন সম্পর্কে। 

আপনি যদি দিনের পর দিন একিই ধরনের খাবার প্রতিনিয়ত খেতে থাকেন তবে দিন শেষে আপনি অবশ্যই সেটির উপর খুবই বিরক্ত হয়ে উঠবেন। এর চেয়েও বড় কথা হচ্ছে আপনি কি সম্পূর্ণ নিউট্রিশন এবং এর সুফল ভোগ করতে পারছেন কিনা! 

Some Homemade Dog Food

কুকুরের বাচ্চার খাবার | হোমমেইড ডগ ফুড বেনিফিটঃ

হোমমেইড ডগ ফুড আপনার পোষা কুকুরের জন্য বিভিন্ন ভাবে উপকার বয়ে নিয়ে আসতে পারে। যদি আপনার পোষা প্রাণীটি এলার্জি, স্কিন সমস্যা বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনুভব করে থাকে তবে তার জন্য হোম মেইড খাবারের বিকল্প নেই। 

অনেক সময় কুকুরের জন্য হাইলি প্রসেসড ফুড নিউট্রিশনার ভেলু এড করলেও ভাইটাল কিছু নিউট্রিয়েন্ট এই প্রসেসের সময় হারিয়ে যায় যা খুবই জরুরী। লেবেলে অনেক ধরনের এডিটিবস ও প্রিজারভেটিবস দেখে আপনি কনফিউসড হয়ে যেতে পারেন যে আসলেই এগুলি কুকুরের বাচ্চার খাবার স্বাস্থ্যসম্পন্ন কিনা!

হোমমেইড ডগ ফুড তৈরীতে আপনার বেশ ভালো রকমের একটি সময় ও ইফোর্টের প্রয়োজন হয়। কুকুরের সুস্বাস্থ্য মেইনটেইনের জন্য যত ধরনের নিউট্রিয়েন্ট রয়েছে তার সবগুলিই হোমমেইড ডগ ফুডে রাখা খুবই জরুরী। পাশাপাশি নিউট্রিয়েন্ট গুলির পরিমাণ একদম পর্যাপ্ত হতে হবে যাতে কুকুর বেশী বা অল্প পরিমাণে না পায়। 

Some Homemade Dog Food নিউট্রিশন গাইডলাইনঃ

মানুষের মতোই প্রতিটি কুকুর একটি আরেকটি থেকে আলাদা। তাই ঢালাওভাবে সব কুকুরের জন্য একিই নিয়ম রুলসটি ফলো করা একদমই উচিত না। আপনার কুকুরের ওজন, হেলথ কনডিশন, সাইজ, একটিভিটি লেভেল ইত্যাদি কনসিডার করে খাবারের সার্ভিং সাইজ ঠিক করবেন। 

তবে ছয়টি বেসিক নিউট্রিয়েন্ট সবসময়ের জন্য কুকুরকে দিতে হবে যাতে তার সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে। ব্যালান্সড এই ডায়েট সমূহ হচ্ছেঃ পানি, আমিষ, চর্বি, শর্করা, মিনারেলস এবং কুকুরের ভিটামিন। এই নিউট্রিয়েন্ট সমুহের মিক্সড আপ খাবার কুকুরকে বেড়ে উঠতে এবং এনার্জি দিতে সাহায্য করবে। 

নিউট্রিশন ব্লেন্ড করে আপনি কুকুরের এই ছয়টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার কুকুরের জন্য নিশ্চিত করতে পারেন। এছাড়াও খাবার সাথে মাল্টিভিটামিন যেমন Zesty Paws Multivitamin Chews যোগ করতে পারেন। এতে সে ভিটামিন এবং মিনারেলসের সমন্বয়ে ব্যালান্সড একটি খাবার পাবে। 

তবে যেকোন ধরনের সাপ্লিমেন্ট দেয়া শুরু করার পূর্বেই ভেটের সাথে পরামর্শ করে নিন। অনেক সময় ভিটামিন ও মিনারেলসের সমন্বয়ে অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট কুকুরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। 

অত্যাবশ্যকীয় নিউট্রিয়েন্টঃ

চলুন কিছু অত্যাবশ্যকীয় নিউট্রিয়েন্ট এবিং তাদের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই

প্রোটিন বা আমিষ ( চিকেন, ল্যাম্ব, তার্কি, বীফ, মাছ এবং ডিম)ঃ আমিষ গ্রোথ বাড়াতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন কোষ, টিস্যু, অর্গান, এন্টিবডিস, হরমোনস এবং এনজাইম গড়তে সাহায্য করে। 

ফ্যাট বা চর্বিঃ কিছু স্নেহজাতীয় খাবারে ফ্যাট বা চর্বি পায় কুকুর। এতে করে অর্গান ভালো থাকে এবং স্কিনের সুস্বাস্থ্যতা বজায় থাকে। এতে হেয়ার লস কম হয় এবং চুলের গ্রোথ ভালো থাকে। 

কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাঃ এটি কুকুওরকে হেলদি রাখতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ধরনের গ্লুকোজ সাপ্লাই দেয় ক্রিটিকাল অর্গান গুলিতে যেমন ব্রেন। 

মিনারেলস ( ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,আইরন, জিংক ইত্যাদি)ঃ

এগুলি কুকুরে হার গঠন ও মজবুতে সহায়তা দেয়। এছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন অংগ সুগঠনেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

ভিটামিনঃ চোখ ও স্কিনের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ইমিউনি সিস্টেম বুস্ট আপ করে। 

কুকুরের ওজনের ৬০-৭০ শতাংশ পানি খেতে দেয়া উচিত যাতে সে হাইড্রেট থাকে। ডিহাইড্রেশনের কারণে অনেক ধরনের হেলথ ইস্যু হতে পারে। তাই সুষম খাবারের পাশাপাশি পরিষ্কার পানি যেন পেতে পারে সেটি নিশ্চিত করুন। 

হোমমেইড খাবারের মেনু ভেটের সাথে শেয়ার করুন। এতে করে তিনি নিশ্চিত করতে পারবেন যে কুকুরটির খাবারে সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। 

লো ক্যালরি ডগ ফুড রেসিপিঃ

কিছু রেসিপি রয়েছে যাতে লো ক্যালরি বিদ্যমান এবং মডারেট ভাবে এগুলি কুকুরের ডায়েটে ব্যবহার হতে পারে। ভেটের সাথে কনসাল্ট করে ডিটারমাইন করুন ঠিক কি পরিমাণে ক্যালরির প্রয়োজন আপনার কুকুরের। এরপর সে অনুযায়ী খাবার খেতে দিন।  

কিছু বাসায় কুকুরের খাবার তৈরি রেসিপিঃ Some Homemade Dog Food

১। সিবিডি- ইনফিউসড ডোগ ট্রিটসঃ

আপনি চাইলে সিবিডি ডগ ট্রিট কিনতে পারেন। তবে আপনার সময় থাকলে ঘরে বসেই এটি বানিয়ে নিতে পারেন। তবে অবশ্যই ভেটের সাথে পরামর্শ করে নিবেন যে কুকুরের খাবারে আপনি সিবিডি যুক্ত করতে যাচ্ছেন। আর পরিমান অবশ্যই সঠিকভাবে মেইনটেইন করবেন। 

উপাদানঃ

  • আড়াই কাপ গ্লুটেন ফ্রী ময়দা
  • আধা কাপ ওটস 
  • ১ কাপ পাম্পকিন পুর
  • ১ চামুচ কোকনাট সুগার
  • ১ টি আপেল কুচি কুচি করা
  • আধা কাপ কুচি করা গাজর
  • ১ টি ডিম
  • ১/৩ কাপ অলিভ বা কোকনাট তেল
  • ১/২ কাপ পানি
  • প্রয়োজন মত লবণ
  • ১২০ মিগ্রা সিবিডি ওয়েল 

২৪ টি ট্রিট বানাতে পারবেন। 

ডিরেকশনঃ

১। ওভেনে ৩৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে প্রি হিট করুন। বেকিং ট্রেতে কোকনাট ওয়েল দিন। 

২। আপেল কুচি দিন। এরপর গাজর কুচি যোগ করুন। 

৩। মিডিয়াম সাইজ বোলে গ্লুটেন ফ্রী ফ্লোর, ওটস এবং কোকনাট সুগার একত্রে মিশান। আরেকটি মিডিয়াম সাইজ বোলে ডিম বিট করুন। এরপর সব একত্রে এক বোলে মিশিয়ে ফেলুন। 

৪। এরপর শুকনো ইনগ্রেডিয়েন্ট গুলির সাথে ভেজা ইনগ্রেডিয়েন্ট একত্রে মিশান। 

৫। ডগ বিস্কিট গুড়া করে এক চামুচ সমপরিমান বেকিং প্যানে মিশান। 

৬। এরপর ওভেনে ৩২-৩৭ মিনিট বেক করুন এবং গোল্ডেন ব্রাউন কালার হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। 

৭। এরপর স্টোর টাইট এয়ার কন্টেইনারে স্টোর করুন। 

বীফ স্টু, বাসায় তৈরি

এই রেসিপি আয়রন সমৃদ্ধ ফ্রেশ প্রোটিনে সমৃদ্ধ এবং ফ্রীজে অনেকদিন সংরক্ষন করে রাখতে পারবেন। 

ইনগ্রেডিয়েন্টসঃ

  • ১ পাউন্ড বীফ স্টু মীট
  • ১ টি ছোট আলু
  • ১/২ কাপ গাজর
  • ১/২ কাপ গ্রীন বীনস
  • ১/২ কাপ ময়দা
  • ১/২ কাপ পানি
  • ১ চা চামুচ ভেজিটেবল ওয়েল 

এই প্রণালীতে ৪ কাপ বীফ স্টু রান্না করতে পারবেন। 

নিউট্রিশনাল তথ্যঃ

ক্যালরিঃ ৩০১

প্রোটিনঃ ৩৬ গ্রাম

ফ্যাটঃ ৮ গ্রাম

কার্বসঃ ১৭ গ্রাম

মিনারেলস ও ভিটামিনঃ ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, আইরন, পটাশিয়াম 

ডিরেকশনঃ 

১। আলু মাইক্রোওয়েভে ৫-৮ মিনিটে হীট করুন। 

২। বীফ ছোট সাইজে কাটুন। 

৩। বীফ স্টু ভেজিটেবল ওয়েলে ১০-১৫ মিনিট মিডীয়াম হিটে রান্না করুন। 

৪। বীফ চাংক প্যান থেকে সরিয়ে নিন। 

৫। আলু ঠান্ডা হলে ছোট সাইজে কাটুন। 

৬। এরপুর এতে ময়দা ও পানি মিক্সড করুন এবং অল্প আচে নাড়াতে থাকুন। 

৭। এরপর মাংস, ক্যারট, গ্রীন বীন সব এক্ত্রে মিশিয়ান

৮। ১০ মিনিট চুলাতে রান্না করুন। 

৯। ঠান্ডা হতে দিন এবং সার্ভ করুন। 

১০। এভাবে ৫ দিন পর্যন্ত ফ্রীজে সংরক্ষন করে খেতে দিতে পারবেন।  

ফ্রোজেন ব্যানানা ট্রিটঃ

ইনগ্রেডিয়েন্টসঃ

  • ৪ কাপ দই
  • ২ চামুচ জাইলিটল ফ্রী পিনাট বাটার
  • ৩ টি পাকা কলা, পিলড এবং ম্যাসড

নিউট্রিশন ইনফরমেশনঃ

ক্যালরিঃ ১৫০

প্রোটিনঃ ৯

ফ্যাটি; ৪

কার্বসঃ ২০

মিনারেলস ও ভিটামিনসঃ ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আইরন 

ডিরেকশনঃ

১। সব ইনগ্রেডিয়েন্ট ভালভাবে ব্লেন্ড করুন। 

২। ৪ আউন্স প্লাস্টিক কাপে ঢালুন। চাইলে আইস ট্রে বা টডোলার পপসিকল ট্রে ব্যবহার করতে পারেন।

৩। Some Homemade Dog Food ফ্রীজিং করুন ফার্মিং হওয়া পর্যন্ত।

৪। বাসায় তৈরি ২ সপ্তাহ সংরক্ষণ করে খাওয়াতে পারবেন। 

এছাড়া আপনার বাসার পোষা কুকুরটিকে যদি পটি ট্রেইন করতে চান, তাহলে এই বিষয়ে লেখা আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে দেখতে পারেন। আশাকরি এখান থেকে অনেক উপকৃত হবেন।

2 thoughts on “বাসায় তৈরি ডগ ফুড রেসিপি Some Homemade Dog Food”

Leave a Comment